টানা তৃতীয় মেয়াদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের তিনিই প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা না হলেও ভোটগণনায় স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস।
ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়েই শুরু হয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবন। রাজনৈতিক জীবনে ছিল নানা উত্থান পতন। তার নেতৃত্বেই পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটে।
১৯৫৫ সালের পাঁচ জানুয়ারি কলকাতার হাজরা অঞ্চলের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বাবা প্রমীলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী।
কলকাতার শ্রীশিক্ষায়তন কলেজ থেকে বি.এ পাশ করার পর এম.এ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে নেন এলএলবি ডিগ্রিও।
১৯৭০ এর দশকে কংগ্রেস আই দলে যোগদানের মধ্য দিয়ে মমতার রাজনীতি জীবন শুরু হয়। ১৯৭৬ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কংগ্রেস আইয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
১৯৮৪ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করে সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মমতা। পরে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন সাত বার।
রাজনৈতিক জীবনে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের দুইবার রেলমন্ত্রী, একবার কয়লা মন্ত্রণালয়, একবার মানব সম্পদ উন্নয়ন, ক্রিড়া ও যুবকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৯৭ সালে মমতা কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সর্বভারতীয় তৃণমুল কংগ্রেস গড়ে তোলেন মমতা। ২০১১ সালে তার নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করে তৃণমুল কংগ্রেস। রাজ্যে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি।
২০১৪ সালে মমতার নেতৃত্বেই এককভাবে ৩৪টি লোকসভা আসনে জয় পায় তৃণমুল কংগ্রেস। ২০১৬ সালে আবারও বিপুল ভোটে জিতে দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করেছেন ৬৬ বছর বয়সী মমতা। বিশেষ করে কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিরোধীতা করে আন্দোলন করেছিলেন মা, মাটি, মানুষের এই নেত্রী।